সয়া প্রোটিন এর উপকারিতা | সয়া প্রোটিন একবিংশ শতাব্দীর বিস্ময়কর আবিষ্কার

সয়া প্রোটিন এর বিস্ময়কর কার্যকারিতা, কে আমেরিকান খাদ্য ও ঔষধ অধিদপ্তর অক্টোবর, ১৯৯৯ সালে স্বীকৃতি প্রদান করে |সয়াবিন এই নামটি আমাদের অনেকেরই জানা| সারা বিশ্বে বহুত প্রচলিত ও অতি জনপ্রিয় একটি পুষ্টিকর খাদ্যের নাম সয়াবিন |এর বোটানিক্যাল নাম Glycin Max Merr ইংলিশ নাম সয়াবিন |প্রায় তিন হাজার বছর থেকে বিশ্বের অনেক দেশে বিশেষ করে চীনা দেশে সর্বপ্রথম সয়াবিনের চাষাবাদ শুরু হয়|

সয়া প্রোটিন এর উপকারিতা

এছাড়া পরীক্ষায় দেখা গেছে চাল ও গম থেকে সয়াবিন ১০ গুন বেশি পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ রয়েছে| পুষ্টি গবেষণার ফলাফল আমেরিকায় ,ভারতীয় ও বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরীক্ষিত ও নির্ধারিত এর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে হলে আমাদের এই পেজটি সম্পূর্ণ ভালোভাবে পড়ুন|

সয়াবিন বিশ্বের একমাত্র খাদ্যশস্য যাতে রয়েছে সর্বাধিক ৫২ পার্সেন্ট প্রোটিন এবং অতি কম পরিমাণে প্রায় ১৯% কার্বোহাইড্রেট |বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমেরিকার খাদ্য ও ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃক, আমেরিকান হার্ড অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকার সয়াবিন উৎপাদক অ্যাসোসিয়েশন এর প্রখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষক ও পুষ্টিবিজ্ঞানীরা এক বাক্যের স্বীকার করেছেন |

নিম গাছ একুশ শতকের বৃক্ষ

সয়া প্রোটিন ইতিহাসের গোড়াপত্তন

২৮৩৮ খ্রিস্টপূর্বের চীন দেশে তৎকালীন সম্রাট  সেন ইয়ং তার রাজত্বে বাধ্যতামূলকভাবে সয়াবিন চাষ করতেন |এবং উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য হিসেবে রাজ পরিবারের সদস্যরা স্বল্পমাত্রায় সারা বছর খাদ্য গ্রহণ করতেন| প্রাচীনকালে ভারতীয় মনি ঋষিরা মধুর সাথে দেহের পুষ্টি সাধনের জন্য উৎকৃষ্ট ও শক্তিশালী খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করতেন| পরবর্তীতে এর পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে বিশ্বের প্রায় সকল উন্নত দেশে তথা আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ,ইংল্যান্ড ,জাপান, কোরিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ও ভারতবর্ষেও চাষাবাদ প্রচলিত হয়েছে|

সয়া প্রোটিন একবিংশ শতাব্দীর বিস্ময়কর আবিষ্কার
সয়া প্রোটিন একবিংশ শতাব্দীর বিস্ময়কর আবিষ্কার

 

সয়া প্রোটিন চাষাবাদ

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে এর চাষাবাদ শুরু করা হয়েছে| যদিও সয়াবিন আমাদের দেশে উৎপাদিত হচ্ছে |তার বেশিরভাগই এনজিওরা বিদেশের রপ্তানি করছে |বাংলাদেশের সয়াবিনের প্রাপ্যতা সত্ত্বেও আমরা এর পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে অনেকেই অবগত নই বা জানিনা| আধুনিক যুগের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানীরা সুদীর্ঘকাল সময় ধরে গবেষণা ও পরীক্ষা পূর্ব প্রমাণ করেছেন যে প্রচলিত  চাল বা অন্যান্য খাদ্যের প্রায় দশগুণ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ|

ওয়ালটন চার্জার ফ্যান

সয়া প্রোটিন পাউডার

সয়া প্রোটিন দুটি অতি মূল্যবান উপাদান রয়েছে প্রথমটির নাম  Isoflavin দ্বিতীয়টির নাম হচ্ছে Stenols আর এই দুটি উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য অতি মূল্যবান  উপাদান রূপে স্বীকৃত সারা পৃথিবীতে|

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ঘোষণা আজ সারা বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিশেষ করে আমেরিকা ,কানাডা, চীন, জাপান ,মালয়েশিয়া ,কোরিয়ার ,আসিয়া সহ ইউরোপের উন্নত দেশসমূহের জনগোষ্ঠী আজ সয়া প্রোটিন বা সয়া প্রোটিন থেকে উৎপাদিত  কেক ,বিস্কুট আকারে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য তৈরি করে নিয়মিত খাদ্যাভাস অন্তর্ভুক্ত করেছে| ফলে ওই সমস্ত দেশের জনগোষ্ঠীর গড় আয়ু অনেকদিন পেয়েছে |এবং হৃদরোগ ডায়াবেটিস অকাল মৃত্যু দায়ক রোগের কবল থেকে 50 থেকে 80 পার্সেন্ট জনগোষ্ঠীর মুক্ত হয়েছে| সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে ৪০ বছর জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭০ ভাগে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হয়ে জীবন যাপন করছে|

 

তুলসী রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক দেয়াল

যদি প্রতিদিন২৫ গ্রাম আইসোলেটেড সোয়াপটি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কম কার্বোহাইড্রেট ও অধিক প্রোটিনযুক্ত খাদ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তবে করোনারি হার্ট ও হার্ট এটাকের সম্ভাবনা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কমে যাবে এবং মানব জীবন সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে

 

সয়া প্রোটিন ঔষধি গুনাগুন

ক্রমশ দেহে চর্বি বাড়ার কারণে  করোনারি হৃদরোগ উচ্চ রক্তচাপ রক্তনালী অবরোধ হওয়া ডায়াবেটিস হওয়া ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করে |অথবা ওই ব্যক্তির স্বাভাবিক ১৫ বছর আয়ু ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সচেতন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা সুদীর্ঘকাল গবেষণা করে প্রমাণ করেছে একমাত্র প্রাকৃতিক পুষ্টি খাদ্য ছায়া প্রোটিনের নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেহে চর্বি হৃদরোগ ,ডায়াবেটিস, টিউমার রোগ সমূহ প্রতিরোধ ও নির্মূল করা সম্ভব|

সয়া প্রোটিন খাওয়ার নিয়ম

যেহেতু এটি একটি পরিবর্তিত পুষ্টি খাদ্য তাই যারা দেহে অধিক চর্বি- ওজন কমাতে চান| তারা নিচের পদ্ধতিতে সেবন করতে পারেন| সকালে নাস্তার পরিবর্তে ৪ চা চামচ প্রোটিন পাউডার  ও পরিমান মত পানি  এক টুকরো আপেল এক টুকরো পেঁপে আধা কাপ কমলার রস 250 ml পানির সাথে ব্লেন্ডার করে ভালোভাবে মিশিয়ে ধীরে ধীরে সেবন করবেন| প্রয়োজনের দুই এক টুকরো বরফের হতে পারে| কখনো ১০০ গ্রাম ফ্যাট ফ্রি টক দই বা সয়া দুধ ১৫০ মিলি, ১০০ মিলি পানির সাথে ব্লেন্ডিং ও মিশ্রণ করা যেতে পারে|

দুপুরে এবং রাতে আপনার সুবিধা অনুযায়ী খাবার খাওয়ার পরিবর্তে| উপরের নিয়ম অনুসারে প্রস্তুত মিশ্রণ সেবন করতে পারেন| কোন প্রকার অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ চলবে না |দুপুরে রাতে দিনে কেবলমাত্র একবারই আপনার পছন্দমত ঘরে তৈরি প্রচলিত খাবার| যেমন ছোট মাছ ,ভাত, ডাল, সবজি খেতে পারেন| তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অত্যাধিক খাবার না হয়| তাতে ওজন রাশে বাঁধা সৃষ্টি হতে পারে| দিনে পর্যাপ্ত অর্থাৎ ১০ থেকে ১২ ক্লাস বা তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হবে|

এলোভেরা (ঘৃতকুমারী) প্রকৃতির এক অনন্য উপহার

কেননা দেহের বাড়তি চর্বি আপনার মলমত্রের সাথে অধিক পরিমাণে বের হবে|

যারা দেহের ওজন বাড়াতে চান তারা উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী ড্রিঙ্ক মিশ্রণ প্রস্তুত করে সকালের নাস্তা দুপুর রাতের খাবারের এক ঘণ্টা পর দিনে তিনবারই ২৫০এমএল মিশ্রণ সেবন করবেন| তাতে মাসে ২-৩ কেজি ওজন বৃদ্ধি পাবে |এবং আদর্শ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার খাবেন| রাতে খাবার পরিবর্তে নিয়ম অনুসারে মিশ্রণটি সেবন করবেন যাতে আদর্শ ওজন বজায় থাকবে|

সয়া প্রোটিন সেবনে সতর্কতা

এক   সর্বদা সকল প্রকার তেলমুক্ত খাবার খাবেন|

দুই    মিশ্রনের লবণ, চিনি বা দুধ দিবেন না| চিনির প্রয়োজন হলে প্রাকৃতিক স্টেভিয়া ব্যবহার করবেন| চা বা কফি সেবন করতে পারেন|

৩   বিকালে কোন সময় ক্ষুধা অনুভব করলে ১৫০ এমএল সোয়া প্রোটিন ড্রিঙ্ক মিশ্রণ তৈরি করে সেবন করতে পারেন| অন্য কোন আলাদা স্ন্যাক, ডিম, তেলে ভাজা খাদ্য, মিষ্টি ,বিস্কিট খাবেন না |আপনি যদি মাসে চার থেকে সাত কেজি ওজন কমাতে চান নিয়মের কোন প্রকার ব্যতিক্রম করা চলবে না |

সর্বদা তাজা মিশ্রণ তৈরি করে সেবন করবেন।

 

Leave a Comment