তুলসী রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক সুরক্ষা দেয়াল তুলসী| তুলসী একটি ঘন শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট ২ থেকে ৩ ফুট উঁচু একটি গাছ |এর মূল কান্ড কাষ্ঠল পাতা দুই থেকে চার ইঞ্চি লম্বা হয় |পাতার কিনারার খাস কাটা, শাখা প্রশাখার অগ্রভাগ হতে পাঁচটি পুষ্পদন্ড বের হয়|
তুলসী পাতা
তুলসী পাতা চারিদিকে ছাতার আকৃতির মত ১০- ২০ টি স্তরে ফুল থাকে| প্রতিটি স্তরে ছয়টি করে ছোট ফুল ফোটে| এর পাতা ফুল ও ফলের একটি ঝাঁঝালো গন্ধ আছে |
পুদিনা পাতার গুনাগুন
মানুষ এক সময় প্রকৃতি থেকেই তার অসুখ এর পথ্য আহরণ করত| বিভিন্ন গাছ লতাপাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো| এসব কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই| মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে এসবকে পরিত্যাগ করছে|তবে চীন এবং ভারতে এই ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে| তুলসী একটি ঔষধি গাছ|
তুলসীর অর্থ = যার তুলনা নেই
তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বা তুলসী পাতার উপকারিতা
সুগন্ধিযুক্ত কটু তিক্তরস রুচিকর| এটি সর্দি, কাশি, কৃমি ও বায়োনাসক এবং মূত্র কর হজম কারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয় |তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক|
তুলসী গাছের নানান ঔষধি ব্যবহার রয়েছে সর্দি ,কাশি ,ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি নানা সমস্যায় তুলসী ব্যবহার করা হয়| এ গাছের রস, কৃমি ও বায়ুনাসক ঔষধ হিসেবে| এই গাছের ব্যবহার অংশ হলো এর রস পাতা এবং বীজ |বাংলাদেশের যে চার প্রকার তুলসী গাছ দেখা যায় সেগুলো হল বাবুই তুলসী,রাম তুলসী, কৃষ্ণ তুলসী, ও শ্বেতী তুলসী|
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসীর পাতায় পারদ ও আয়রন থাকে যা আমাদের দাঁতের পক্ষে ভালো নয়| আপনি পাতা চিবানোর সময় পারদ আপনার মুখে চলে যায়| যা আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে |এছাড়া তুলসী পাতা কিছু পরিমাণ আর্সেনিকও পাওয়া গেছে| যা দাঁত নষ্ট করতে পারে |তুলসী পাতার প্রাকৃতিকভাবে সামান্য এসিডযুক্ত যা ব্যথা হতে পারে| তুলসী পাতার অনেক গুণ কিন্তু সঠিক পদ্ধতি মেনে না খেলে হিতে এর বিপরীত হতে পারে
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে হজম শক্তি বাড়ে| তুলসী পাতায় রয়েছে কর্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্য যা এসিডিটি, পেটের সমস্যা কমায়| খালি পেটে তুলসির রস পান করলে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন দূর হয়| সাধারণ শক্তি বাড়ে পাচ অন্তত সুস্থ থাকে| মুখের স্বাদ ভালো থাকে| আরও অনেক ধরনের উপকারিতা আছে|
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলশীর রস এবং নারকেল তেল লাগান এতে জ্বালা কমবে| পোড়া জায়গা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে| সেখানে কোন দাগ থাকবে না |ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য এছাড়া ত্বকের বলি রেখা ও ব্রণ দূর করার জন্য তুলসী পাতা পেস্ট মুখে লাগান|
চর্ম রোগে তুলসী পাতা দুর্বল ঘাসের ডগার সঙ্গে বেটে মাখলে ভাল হয় |ডায়রিয়া হলে ১০ থেকে ১২ টি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন সুস্থ হয়ে যাবেন|
এলোভেরা (ঘৃতকুমারী) প্রকৃতির এক অনন্য উপহার
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে চার-পাঁচবার তুলসী পাতা চাবান| ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান কমে যাবে|
বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাতটা তুলসী পাতা চাবান| প্রসাবের জ্বালা হলে তুলসী পাতার রস, আড়াইশ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন উপকার পাবেন |ত্বকের সমস্যা দূর করতে তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা হালকা গরম করে তকে লাগান উপকার পাবেন|
তুলসী গাছের মূল শুক্র গারো করে যা পুরুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ|
তুলসী সিরাপ
তুলসী সিরাপ ইহা শুষ্ক কাশি, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, এলার্জি জড়িত কাশি সহ ফুসফুসের কাশিতে কার্যকরী|ইহা জমাট বাঁধা কফ তরল করে বের করে দেয়| ইহা স্বরভঙ্গ এবং গলা ব্যথা চিকিৎসায় কার্যকরী| ইহা সাসনালীর প্রদাহে এবং হাঁপানি চিকিৎসায় উপকারী|
কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
কাশি যদি না কমে সেক্ষেত্রে তুলসী পাতা এবং আদা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান কাশি দ্রুত ভালো হয়ে যাবে|
তুলসীর মূল শুক্র গারো করে| তুলসীপাতা ,এলাচগুরু এবং সামান্য মিশ্রি পান করলে ধাতু পুষ্টি হয়| এটি অত্যন্ত উত্তেজক প্রতিদিন এক ইঞ্চি সামান্য মিশ্রি পানের সাথে খেলে যৌন দুর্বলতা কেটে যায় |কোন কারণে রক্ত দূষিত হলে কালো তুলসী পাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায় ঠান্ডার জন্য নাক বন্ধ হয়ে গেলে কোন গন্ধ পাওয়া যায় না এই সময় শুকনো পাতার গন্ধ নিলে উপকার পাওয়া যায়|তুলসী পাতার চা এর রয়েছে অনেক উপকারিতা|
শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতার সঙ্গে এক টুকরো আদা মিশিয়ে নিন দিনে দুবার শিশুকে খাওয়ান মধু মিশিয়ে নিতে পারেন| একটি পাত্রে গরম পানি তাতে আদার কুচি তুলসী পাতা দারুচিনির গুড়া এবং তুলসী পাতার গুড়া মিশিয়ে সরাসরি শিশুকে খাওয়াতে পারেন|