এলোভেরা (ঘৃতকুমারী) প্রকৃতির এক অনন্য উপহার

এলোভেরা  প্রকৃতির এক অনন্য উপহার| এলোভেরা বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ এবং দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মতো |এর পাতা গুলি পুরো  দুধারে করাতের মতো কাটা এবং ভেতরে লালার মতো পিচ্ছিল শ্বাস থাকে| সবরকম জমিতে এলোভেরা চাষ সম্ভব তবে| দোয়াশ ও অল্প বালি মিশ্রিত মাটিতে  গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় |নিয়মিত জল সেঁচে দরকার হলেও গাছের গোড়ায় যাতে জল না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে|

বর্তমানে ওয়ালটন এসির দাম ২০2৪

এলোভেরা গাছ

আনারস গাছের মতো দেখতে| পাতাগুলো অনেকটাই পুরো| করাতের মত কাটা থাকে এবং ভেতরে লালার মতো পিচ্ছিল শাঁস থাকে| সব জমিতেই এলোভেরা চাষ করা যায় বালি মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়| নিয়মিত জল শেষ দিতে হয় এবং গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমে সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হয়| সাধারণত শেখর থেকে গজানো ডাল বা শাখা এর সাহায্যে এই গাছের বংশবৃদ্ধি হয়|

এলোভেরা (ঘৃতকুমারী) প্রকৃতির এক অনন্য উপহার
এলোভেরা (ঘৃতকুমারী) প্রকৃতির এক অনন্য উপহার

 

 

 

এলোভেরা গাছ লাগানোর পদ্ধতি

এলোভেরা গাছগুলো সাধারণত সারিসারি ভাবে লাগানো হয়| এক সারি থেকে আরেক সারির দূরত্ব ১০ ইঞ্চি ও প্রতি শাড়িতে ৭ ইঞ্চি পর পর চারা গাছ লাগানো হয়| 2 মিটার চওড়া বেডে দুই শাড়িতে ও আড়াই মিটার চওড়া বেডে তিন সারিতে চারা রোপন করা হয়| এক হিসেবে দেখা গেছে এক বিঘা জমিতে প্রায় তিন হাজার গাছ লাগানো যায়|

১০ সেফটি ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর

এলোভেরা গাছের পরিচর্যা

ছায়াযুক্ত জমিতে অ্যালোভেরা  চাষ হবে না |অ্যালোভেরার জন্য দরকার সারাদিন রোদ থাকবে এমন জমি| তৈরি জমি এলোভেরা চাষ  করতে হলে জমি প্রথমে ভালোভাবে পরিষ্কার করে চাষ দিতে হবে| চাষের সময় হেক্টর প্রতি ১০ থেকে ১২ টন গোবর মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে| এছাড়া এ সময় হেক্টর প্রতি 250 থেকে ৩০০ কেজি টিএসপি ও ১০০ থেকে ১২০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে|

এলোভেরা গাছ দ্রুত বড় করার উপায় 

নিয়মিত এলোভেরা গাছের যত্ন ও পরিচর্যা করলে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয়| তবে লক্ষ্য রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন জল না জমে| তার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত সূর্যালোক |আসুন জেনে নেই অ্যালোভেরা গাছ দ্রুত বড় করার উপায় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো|

হাড়ের গুড়ো ও ডিমের খোসার গুড়ো এবং আলুর খোসা ও কলার খোসার গুড়ো সাহায্যে এলোভেরা গাছ দ্রুত বড় করা সম্ভব| এলোভেরা গাছের গোড়ার মাটির সঙ্গে হাড়ের গুঁড়ো ডিমের খোসার গুড়ো ভালোভাবে মিশিয়ে দিলে এলোভেরা গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয়| এবং সেই সাথে গাছের পাতা অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায়| এছাড়াও এলোভেরা গাছের গোড়ার দিকে নতুন চারা জন্মাতে শুরু করে| এবং সেই তারা গুলো অন্যতম রোপন করলে দ্রুত বড় হয়|

এলোভেরার উপকারিতা

এই এলোভেরা তে রয়েছে 20 রকমের খনিজ পদার্থ |মানব দেহের জন্য যে 22  অ্যামাইনো এসিড প্রয়োজন তা এই এলোভেরার বিদ্যমান| এছাড়াও ভিটামিন এ ই1, ই2, ই6, ই 12 ইত্যাদি রয়েছে|

অ্যালোভেরার পাতা ও শ্বাস ব্যবহার করা হয় এর পাতার রস যকৃতের জন্য খুবই উপকারী

নিয়মিত অ্যালোভেরা রস পানে পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ হয়| ফলে দেহের পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকে |এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় |তাছাড়া ডায়রিয়া সারাতে ও অ্যালোভেরা রস দারুন কাজ করে| নিয়মিত এলোভেরা রস সেবনে শরীরের শক্তি যোগানসহ ওজনকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে| অ্যালোভেরা সাদা ব্লাড সেল গঠন করে যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে|

দেহ থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণে এলোভেরার রস একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঔষধের মতো কাজ করে| অ্যালোভেরার রস সেবনের ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের মিশ্রণ ও খনিজ  পদার্থ তৈরি হয় যা আমাদেরকে চাপমুক্ত রাখতে| এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে| এলোভেরার রস  হাড়ের সন্ধিকে সহজ করে এবং দেহে নতুন কোষ তৈরি করে |এছাড়া হার ও মাংসপেশীর জোড়াগুলোকে শক্তিশালী করে সেই সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ উপশমনে কাজ করে|

ঘৃতকুমারী বা  এলোভেরার পাতার রস ত্বকের উপর লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং রোদে পুরা ত্বকের ক্ষেত্রেও উপকারী| অনিয়মিত এবং অস্বাভাবিক ঋতুকে নিয়মিত করতে বেশ উপকারী| কোনো ভারি কিছু তুলতে গেলে বা উঁচু নিচুতে পা ফেলতে কোমরে ঠিক ব্যথা হলে ঘৃতকুমারীর বা অ্যালোভেরার শ্বাস মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায় |

এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম

ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা একটি জুস বা সালাত হিসেবে খাওয়া যায়| প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস অ্যালোভেরা জুস পান করলে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা যায়| ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা টিউব করে কেটে সালাত বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে| এছাড়া শরবতের মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন স্বাদ খারাপ না চমৎকার লাগে |

ঘৃতকুমারী বা এলোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

এলোভেরা জেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে |এবং এর ভিটামিন এ, বি, সি, এই উপাদান ত্বকের পুষ্টি যোগায়|রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে এটি ব্যবহার করা হয়| দুই টেবিল চামচ এলোভেরা জেল আর অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মাস্ক তৈরি করতে হয়| রোদে পোড়া মুখে বা ত্বকে লাগিয়ে 15 মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়|

পুরুষদের জন্য এলোভেরার উপকারিতা

পুরুষদের জন্য এলোভেরা রাতে ব্যবহার করা ভালো |অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা পাপাইয়ের নামক উপাদান ত্বকের মৃতকোষ দূর করে এবং স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে ত্বকের ভেতর থেকে টানটান করতে সাহায্য করে| এর ফলে আপনার ত্বক থাকবে অনেক সুন্দর আপনি সবসময় থাকবেন চির তরুণ| এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে আপনার শরীর থাকবে সবসময় ফিট|

এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

চুলের যত্নে এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুল থাকবে সবসময় সুন্দর | সর্বাধিক উপকারের জন্য অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করার উপায় গুলো নিচে দেওয়া হল|

এলোভেরা গাছের পাতা কেটে নিন| একটি চামচ ব্যবহার করে জেল সংগ্রহ করুন | অ্যালোভেরা জেল টি সরাসরি আপনার ত্বকে ঘষাঘষি করুন এবং এক ঘন্টা সময় দিন যেন জেলটি আপনার মাথায় ভালোভাবে শুকিয়ে যায়| একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে আপনার মাথার চুল ধুয়ে ফেলুন| এভাবে সপ্তাহে দুইবার পুনরাবৃত্তি করুন আপনার চুল থাকবে ঝলমলে সুন্দর, কোমল, মসৃণ|

 

Leave a Comment